জাঙ্গল উদ্ভিদ ও লবনাম্বু উদ্ভিদের পার্থক্য


উদ্ভিদের সঙ্গে জলের সম্পর্কের ভিত্তিতে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা উদ্ভিদ গোষ্ঠী কে কয়টি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন, যার অন্যতম দুটি হল জাঙ্গল উদ্ভিদ ও লবনাম্বু উদ্ভিদ। এখানে এই জাঙ্গল উদ্ভিদ ও লবনাম্বু উদ্ভিদের পার্থক্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। 

1) সংজ্ঞা 
👉 যে সমস্ত উদ্ভিদ জল সঙ্কট যুক্ত পরিবেশে জন্মায় ও বড়ো হয়, তাদের জাঙ্গল উদ্ভিদ বা জেরোফাইট বলে। যেমন - ফণীমনসা, ঘৃতকুমারী, বাবলা, আকন্দ, ক্যাকটাস ইত্যাদি।
👉 সমুদ্র উপকূলবর্তী লবণাক্ত জলাসিক্ত পরিবেশে যে বিশেষ শ্রেণির উদ্ভিদ প্রজাতি দেখা যায়, তাদের লবনাম্বু বা হ্যালোফাইট উদ্ভিদ বলে। যেমন - সুন্দরী, গরান, হেতাল, গোলপাতা ইত্যাদি।

2) জলবায়ু 
👉 জাঙ্গল উদ্ভিদ মরু বা মরু জলবায়ু যুক্ত শুষ্ক পরিবেশে জন্মায়।
👉 হ্যালোফাইট শ্রেণীর উদ্ভিদ লবণাক্ত আর্দ্র জলবায়ুতে জন্মায়।

3) পরিবেশ
👉 কম জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস, অধিক বাষ্পীভবন এবং মাটিতে প্রকট জলাভাব যুক্ত পরিবেশে জাঙ্গল উদ্ভিদ জন্মগ্রহণ করে। 
👉 প্রচুর পরিমাণে অজৈব লবণাক্ত যুক্ত কাদামাটি ও লবণাক্ত জলের উপকূলীয় ও নদী মোহনায পরিবেশে লবণাম্বু উদ্ভিদ জন্মায়। 

4) জীবনচক্র
👉 জেরোফাইট শ্রেণীর উদ্ভিদ গুলি ক্ষণস্থায়ী থেকে দীর্ঘমেয়াদী জীবনচক্র বিশিষ্ট হয়। এরা একবর্ষজীবী বা বহুবর্ষজীবী হয়। 
👉হ্যালোফাইট শ্রেণীর উদ্ভিদ গোষ্ঠী দীর্ঘমেয়াদী জীবনচক্র বিশিষ্ট হয়ে থাকে। 

5) কোশ গত বৈশিষ্ট্য
👉 জেরোফাইট জাতীয় উদ্ভিদ জলের প্রাপ্যতা অনুযায়ী কোশের হ্রাস বৃদ্ধি ঘটায়। এরা কোশের মধ্যে জল সঞ্চয় করে রাখে। 
👉 হ্যালোফাইট জাতীয় উদ্ভিদের কোশ নির্দিষ্ট আকারের হয় এবং কোশগুলি পুরু ও শক্ত প্রাচীর দ্বারা আবদ্ধ থাকে। 

6) পাতার বৈশিষ্ট্য
👉 বাষ্পমোচন ও প্রস্বেদন রোধ করার জন্য জাঙ্গল উদ্ভিদের পাতাগুলি কাঁটায় পরিণত হয়। পাতাগুলি রোম ও মোমের আস্তরণ দিয়ে ঢাকা থাকে যাতে অতিরিক্ত জল শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে না পারে।
👉 লবণাম্বু উদ্ভিদের পাতাগুলি পুরু কিউটিকল যুক্ত, মোমের মত মসৃণ এবং পাতাগুলি ছোট ও চামড়ার মতো শক্ত হয়। 

7) উদ্ভিদের প্রকৃতি
👉 জেরোফাইট শ্রেণীর উদ্ভিদ গুলি বীরুৎজাতীয়। 
👉 হ্যালোফাইট শ্রেণীর উদ্ভিদ গুলি বেঁটে ও গম্বুজ আকারের এবং এগুলি বীরুৎ ও কাষ্ঠ ল প্রকৃতির হয়। 

কোন মন্তব্য নেই:

Deejpilot থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.