পরিবেশের ওপর অরণ্য বিনাশের প্রভাব


মানুষ তার চাহিদা মেটানোর জন্য প্রতিনিয়ত অরন্য বিনাশ করে যাচ্ছে, যার প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়ছে পরিবেশের ওপর। যেহেতু বনভূমি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার প্রধান উপাদান তাই অরণ্যবিনাশের ফলে পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের ওপর ঋনাত্মক প্রভাব পড়ছে। যেমন –

১. ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি – গাছের শিকড় মাটিকে ধরে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে রাখে। তাই গাছপালা ধ্বংস হলে ধৌতক্ষয় ও নালিক্ষয়ের মাধ্যমে ভূমিক্ষয়ের হার বেড়ে যায়।

২. মাটির উর্বরতা হ্রাস – উদ্ভিদ ধ্বংসের ফলে মাটিতে জৈব অবশেষ সঞ্চিত হয় না। ফলে হিউমাস তৈরি না হওয়ায় মাটি অনুর্বর ও উৎপাদন ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে।

৩. নদীর গভীরতা হ্রাস পায় – ভূমিক্ষয়ের ফলে পলি সঞ্চিত হয়ে নদীগর্ভ ভরাট হয়ে আসে। ফলে একটানা প্রচুর বৃষ্টিপাত হলে বন্যা দেখা যায়।

৪. অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের ভারসাম্য হ্রাস – বৃক্ষচ্ছেদনের ফলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান বেড়ে যায় ও অক্সিজেনের পরিমান কমে যায়। প্রতিবছর পৃথিবীতে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান ১.৫ ppm হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

. উষ্ণতার বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাতের পরিমান হ্রাস অরণ্য বিনাশের ফলে বাতাসে জলীয় বাষ্প ও কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান বেড়ে যাওয়ায় উষ্ণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে একই সঙ্গে বৃষ্টিপাতের পরিমান হ্রাস পায় এছাড়া জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে

. প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরিমান বৃদ্ধি বনভূমি বৃক্ষহীন হয়ে পড়লে খরা, বন্যা, ভূমিধ্বস, ঝড়ঝঞ্ঝা, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস প্রভৃতি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরিমান বেড়ে যায়

. মরুভূমির প্রসার বনভূমি মরুভূমির প্রসার কে রোধ করে তাই বনভূমি ধ্বংস হলে মরুভূমির বিস্তার ঘটে

. জলচক্রের ব্যাঘাত বনভূমির অভাবে ভৌমজলের ভাণ্ডারে টান পড়ে ফলে জল প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বায়ুমন্ডলে ফিরে যেতে পারে না ফলে জলের আবর্তন ব্যাহত হয়

. বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্টবন বিনাশের ফলে বহু বন্য প্রানী তাদের বাসস্থান হারিয়ে ফেলে, ফলে 

একসময় তারা পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় উদ্ভিদ ও প্রানীর মধ্যেকার যোগসূত্র বিঘ্নিত হয় ফলে বাস্তুতান্ত্রিক নষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জীব বৈচিত্র্য হ্রাস পায় ও পরিবেশের অবক্ষয় ঘটে

কোন মন্তব্য নেই:

Deejpilot থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.