গ্রীন হাউস এফেক্ট এর কারণ ব্যাখ্যা কর
বর্তমানে পৃথিবী যে সমস্থ জটিল সমস্যায় জর্জরিত তার
মধ্যে অন্যতম হল গ্রীন হাউস এফেক্ট। তাই আমাদের গ্রীন হাউস এফেক্টের কারণ ব্যাখ্যা
করার আগে “গ্রীন হাউস এফেক্ট” বলতে সাধারণত কি বোঝানো হয় তার সুস্পষ্ট ধারণা থাকা
প্রয়োজন। নিম্নে গ্রীন হাউস এফেক্ট কী ও গ্রীন হাউস এফেক্টের কারণ ব্যাখ্যা করা
হল।
গ্রীন হাউস এফেক্ট – গ্রীন হাউস কথাটি প্রধানত উদ্ভিদ
বিজ্ঞানে ব্যবহার করা হয়। শীত প্রধান দেশে উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য কাচের ঘর ব্যবহার
করা হয়। এই কাঁচের ঘরের মধ্যে যে পরিমান সূর্যালোক প্রবেশ করে ঠিক সেই পরিমান
সূর্যালোক কাঁচের ঘর ভেদ করে বেরোতে পারেনা বলে কাঁচের ঘরের উষ্ণতা বাইরের থেকে
অনেকটাই বেশি হয় যা উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
বর্তমানে পৃথিবীও এক বিশাল গ্রিন হাউসে পরিনত হতে
চলেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, কাঁচের ঘরের মতো পৃথিবীকে বেস্তন করে রয়েছে বায়ুমণ্ডল। এই
বায়ুমণ্ডল ভেদ করে দিনের বেলা যে পরিমান সূর্যালোক প্রবেশ করে রাতের বেলা সেই
সূর্যালোক পার্থিব বিকিরনের মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে যায়, ফলে পৃথিবীতে তাপমাত্রার
ভারসাম্য বজায় থাকে।
কিন্তু বায়ুমণ্ডলে কিছু কিছু গ্যাস রয়েছে যাদের তাপ
শোষণ করার ক্ষমতা অনেক বেশি। যেমন – কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2), মিথেন (CH4), ক্লোরোফ্লোরোকার্বন
(CFC), নাইট্রাস অক্সাইড (N2O), ওজোন (O3) ও জলীয় বাষ্প (H2O) প্রভৃতি। পৃথিবী থেকে পার্থিব বিকিরন রূপে যে পরিমান তাপ নির্গত হওয়ার কথা তা হচ্ছে না
এই গ্যাস গুলি এই বিকিরিত তাপের কিছু অংশ শোষণ করে নেয়। ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ক্রমশ
বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনা কে গ্রীন হাউস এফেক্ট বলে এবং উপরিক্ত
গ্যাস গুলি কে গ্রীন হাউস গ্যাস বলে।
গ্রীন হাউস এফেক্ট এর কারণ
মানুষের বিভিন্ন কাজকর্মের ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিন হাউস
গ্যাস গুলির পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে এই সব গ্যাস গুলির দ্বারা তাপ শোষণের
পরিমানও বৃদ্ধি পাচ্ছে ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা অনেকটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে সমস্ত
উৎস থেকে এই গ্রিন হাউস গ্যাস গুলি নির্গত হচ্ছে ও গ্রিন হাউস এফেক্ট কে
ত্বরান্বিত করছে, তা নিচে আলোচনা করা হল –
১. জীবাশ্ম জ্বালানির দহন – কয়লা, পেট্রোল, ডিজেল
ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানি কলকারখানা, যানবাহন চলাচলে ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা
হয়। এই সব জীবাশ্ম জ্বালানির দহনে বাতাসে প্রচুর পরিমান কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত
হয়।
২. ক্লোরোফ্লোরোকার্বন (CFC) ব্যবহার – হিমায়ন প্রক্রিয়া, রং শিল্প ও ইলেক্ট্রনিক
শিল্পে প্রচুর CFC ব্যবহার হয়। ফলে বাতাসে CFC পরিমান বৃদ্ধি পায়।
৩. কৃষিতে নাইট্রোজেন সারের ব্যবহার – কৃষি ফসলের
উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য জমিতে নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করা হয়। এই নাইট্রোজেন বাতাসের
অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে নাইট্রাস অক্সাইড উৎপন্ন করে।
৪. জৈব আবর্জনার পচন – নানা ধরণের জৈব আবর্জনা পচে,
মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণী দেহের পচন ও গবাদি পশুর মলমূত্র থেকে প্রচুর পরিমানে মিথেন
গ্যাস বাতাসে মিশে।
৫. অন্যান্য গ্যাস – ওজোন গ্যাসের ধ্বংসের ফলে
বায়ুওমন্ডলের উত্তাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া জলবায়ুগত পরিবর্তনে উষ্ণতা বৃদ্ধি
পাওয়ায় বাতাসে জলীয় বাষ্প ধারন করার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে বাতাসে
জলীয়বাষ্পের পরিমান বাড়ছে।
উপরিক্ত কারণ গুলির জন্য বাতাসে গ্রিন হাউস গ্যাসের
পরিমান মাত্রারিক্ত ভাবে বেড়ে চলেছে।
গ্রিন হাউজের ধারনা
উত্তরমুছুনগ্ৰীন হাউস এফেকট বলতে বোঝায়
মুছুন