গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ কাকে বলে


ভারতের প্রধান ও দীর্ঘতম নদীর সুদীর্ঘ গতিপথে বয়ে আনা বিশাল পরিমান পলি বঙ্গোপসাগরের মোহনা অঞ্চলে বহুকাল ধরে সঞ্চিত হয়ে বাংলা অক্ষর ব এর আকারে সুবিশাল যে ভূমিরূপ গঠিত হয়েছে, তাকে গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ বলে। এই ব-দ্বীপ অঞ্চলটি গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর মিলিত কার্যের ফলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের প্রায় 100000 বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। যা পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ অঞ্চল। এই গাঙ্গেয় ব দ্বীপ অঞ্চলটি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত। এই বিস্তীর্ণ গাঙ্গেয় ব-দ্বীপ অঞ্চল কে ভূমিরূপ গত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। 

1. মৃতপ্রায় ব-দ্বীপ - পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও নদীয়া জেলা এবং বাংলাদেশের কুষ্টিয়া ও যশোর জেলার অন্তর্গত সমভূমি কে মৃত প্রায় ব-দ্বীপ বলে। কারণ নদীর এই অংশে ব দ্বীপ গঠনের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। একে বাগড়ী অঞ্চলও বলা হয়। গঙ্গা নদীর মূল প্রবাহ ক্রমশ পূর্ব দিকে সরে যাওয়ায় ভাগীরথীর শাখা নদী গুলি প্রধান নদী গঙ্গা থেকে জল পায় না বলে মজে গেছে বা ক্ষীণ স্রোতায় পরিণত হয়েছে । ফলে এই অংশের নদী গুলির দ্বারা এই অংশে তেমন ক্ষয়, সঞ্চয়, বহন কিছুই হয় না বলে ভূমিরূপ প্রায় স্থির অবস্থায় রয়েছে।

2. পরিণত ব-দ্বীপ - মৃত প্রায় ব-দ্বীপ অঞ্চল এবং উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কিয়দ অংশ বাদে সমগ্র হাওড়া, হুগলি, কলকাতা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাংলাদেশের খুলনা জেলার উত্তরাংশ এই পরিণত ব-দ্বীপ এর অন্তর্গত। নদীর এই অংশে ব দ্বীপ গঠনের কাজ স্বল্প সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। 

3. সক্রিয় ব-দ্বীপ - পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার দক্ষিণ-পূর্বাংশ ও বাংলাদেশের খুলনা জেলার দক্ষিণাংশ এই সক্রিয় ব-দ্বীপের অন্তর্গত। এই সক্রিয় ব-দ্বীপ অংশে সুন্দরবনের সৃষ্টি হয়েছে ও এখানে মনুষ্য বসতির বিকাশ ঘটেনি। তাই এখানে ব দ্বীপ গঠনের কাজ অব্যাহত রয়েছে। ব দ্বীপের এই অংশে ক্রমাগত নদীর সঞ্চয় কাজ হচ্ছে বলে অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপের বিকাশ ঘটছে এবং এই ছোট দ্বীপ গুলি মিলিত হয়ে বৃহৎ দ্বীপের সৃষ্টি করছে। 

কোন মন্তব্য নেই:

Deejpilot থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.