ছোটনাগপুর মালভূমির বৈশিষ্ট্য


দাক্ষিণাত্য মালভূমির উত্তর পূর্বে অবস্থিত ছোটনাগপুর মালভূমি ভারতীয় উপদ্বীপীয় মালভূমির অন্তর্গত। প্রায় সমগ্র ঝাড়খন্ড রাজ্য এবং পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার অংশবিশেষ নিয়ে এই মালভূমি গঠিত। কর্কটক্রান্তি রেখা ছোটনাগপুর মালভূমির প্রায় মধ্যভাগ দিয়ে বিস্তৃত হয়েছে। এই ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলে ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু, নদনদী, কৃষিকাজ, খনিজ সম্পদ প্রভৃতি বিভিন্ন দিক দিয়ে নানা রূপ বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। নিম্নে ছোটনাগপুর মালভূমির বৈশিষ্ট্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো -

1) বহু বছর ধরে বিভিন্ন নদী দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় ছোটনাগপুর মালভূমি বর্তমানে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি অঞ্চলে পরিণত হয়েছে অর্থাৎ এটি একটি ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি। 

2) উপদ্বীপীয় মালভূমি রংস ছোটনাগপুর মালভূমি মূলত আর্কিয়ান যুগের গ্রানাইট ও নিস শিলা দ্বারা গঠিত।

3) ভূ-প্রাকৃতিক তারতম্য অনুসারে ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলকে রাঁচি মালভূমি, হাজারীবাগ মালভূমি, কোডার্মা মালভূমি,  বাগমুন্ডি উচ্চভূমি, রাজমহল পাহাড় প্রভৃতি অঞ্চলে ভাগ করা হয়।

4) হাজারীবাগ মালভূমিতে অবস্থিত পরেশনাথ পাহাড় ছোটনাগপুর মালভূমির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। 

5) সমগ্র অঞ্চলটি পশ্চিম থেকে পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্বে ঢালু।

6) ছোটনাগপুর অঞ্চলের প্রধান নদী হল দামোদর সুবর্ণরেখা। এছাড়া এ অঞ্চলে প্রবাহিত নদীগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অজয়, ময়ূরাক্ষী, বরাকর প্রভৃতি।

7) ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলের মাটি তেমন একটা উর্বর নয়। এখানকার অধিকাংশ অঞ্চলে ল্যাটেরাইট ও লোহিত মাটির প্রাধান্য দেখা যায়।

8) এখানে মৌসুমী পর্ণমোচী উদ্ভিদের প্রাধান্য দেখা যায়। যেমন - শাল, শিমুল, পলাশ, মহুয়া, সেগুন প্রভৃতি। 

9) প্রায় সব ধরনের ধাতব খনিজ সম্পদ যেমন কয়লা, আকরিক লোহা, তামা, বক্সাইট, চুনাপাথর, ইউরেনিয়াম প্রভৃতি অঞ্চলে পাওয়া যায় বলে, ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চল কে ভারতের খনিজ ভান্ডার বলা হয়। 

10) খনিজ সম্পদের প্রাচুর্য এই অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ভারী শিল্পের বিকাশে সহায়তা করেছে। 

কোন মন্তব্য নেই:

Deejpilot থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.