কার্বন ট্রেডিং ও কার্বন ক্রেডিট এর ধারণা

কার্বন ট্রেডিং এর ধারণা - ১৯৯৭ সালে জাপানের কিয়োটো প্রোটোকলে বায়ুদূষন কারী পদার্থের নির্গমন হ্রাসের মাধ্যমে বিশ্ব উষ্ণায়নের হাত থেকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল কে রক্ষার উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০২ সাল থেকে কার্বন ট্রেডিং ধারণার বিকাশ ঘটে। এটি বায়ুমণ্ডলের CO2 পরিমান হ্রাসের উদ্দেশ্যে একটি বাজার কেন্দ্রিক পদক্ষেপ মাত্র।

UNFCCC পৃথিবীর প্রতিটি দেশ কি পরিমান বায়ু দূষক বাতাসে নিঃসরণ করতে পারবে তার একটি নিদিষ্ট মাত্রা ঠিক করে দেয় যদি কোনো দেশ সেই নিদিষ্ট মাত্রার থেকে বেশি বায়ুদূষক নির্গমন করতে চায়, তাহলে অন্য যে দেশ গুলি তাদের সেই নিদিষ্ট মাত্রার থেকে কম বায়ুদূষক ত্যাগ করে, সেই দেশ গুলি থেকে অর্থের বিনিময়ে অতিরিক্ত বায়ুদূষক ত্যাগের পারমিট ক্রয় করতে হবে এই ভাবে বিশ্ব ব্যাপী বায়ুদূষনের পরিমান কমানো সম্ভব

২০০৫ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সর্বপ্রথম এই ধরণের কার্বন ট্রেডিং ব্যবস্থার সূচনা করেন
২০১১ সালে পৃথিবীর সর্বপ্রথম দেশ হিসাবে কানাডা UNFCCC দ্বারা কিয়োটো প্রোটোকলে নির্ধারিত  সেই নিদিষ্ট মাত্রায় পৌছাতে সক্ষম হয়েছে অন্যদিকে বিশ্বের কার্বন ট্রেডিং এর বাজারে প্রধান দুটি বায়ুদূষনকারী দেশ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র চিন সেই নির্ধারিত লক্ষ্যে পৌছাতে এখনও অবধি সফল হয়নি।

কার্বন ক্রেডিট  এর ধারণা - জাপানের ক্রিয়োটো প্রোটোকলে (১৯৯৭) ১৬৯ টি দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক চুক্তি দ্বারা কার্বন ক্রেডিট ধারনার উৎপত্তি হয় ।

কার্বন ক্রেডিট হল এক ধরনের বানিজ্যিক শংসাপত্র বা অনুমোদন যা কোনো একটি দেশকে ১ টন কার্বন বা কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করার অনুমোদন দেয়। ১ টি কার্বন ক্রেডিট ১ টন কার্বন ডাই অক্সাইডের সমান।

যে সব দেশ  জাপানের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে, সে সব দেশ তাদের শিল্প কারখানা বা সংস্থা গুলিকে গ্যাস নির্গমনের নিয়ম বেধে দিয়েছে। এক্ষেত্রে কোম্পানি গুলি দুটি উপায়ে গ্যাস নির্গমনের পরিমান কমাবে।

১. গ্যাস নির্গমনের নতুন নিয়ম অনুসারে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন কমানোর জন্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে বা পুরনো প্রযুক্টি গুলির উন্নতির ঘটাতে হবে।

২. উন্নত দেশগুলি উন্নয়নশীল দেশগুলির সাথে যুক্ত হয়ে উন্নয়ন শীল দেশগুলিতে পরিবেশ বান্ধব নতুন প্রযুক্তি যে গুলি স্থাপন করা। এভাবে উন্নয়নশীল দেশ গুলি কে কার্বন ক্রেডিট পেতে সাহায্য করা। এরপর  উন্নত দেশটি এই কার্বন ক্রেডিট অর্থাৎ ১ টন কার্বন ত্যাগ করার অনুমতি টি নিজের দেশে প্রয়োগ করে।

উন্নয়নশীল দেশ ভারত ও চিন বিশ্বের অন্যতম প্রধান কার্বন ক্রেডিট বিক্রেতা দেশ হিসাবে উত্থিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল এবং ইউরোপীয় দেশ গুলি  কার্বন ক্রেডিট ক্রেতা। বর্তমানে চিন বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো কার্বন ক্রেডিট বিক্রেতা, বাজারের প্রায় ৭০% দখল করে আছে। 

কোন মন্তব্য নেই:

Deejpilot থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.