বায়ুচাপের তারতম্যের কারণ


কোন একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে নির্দিষ্ট সময়ে ওই অঞ্চলের উপর উপস্থিত বায়ু যে বল বা চাপ প্রয়োগ করে, তাকে বায়ুর চাপ বলে।  ৪৫ ডিগ্রি অক্ষাংশে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতায় সমুদ্রপৃষ্ঠের বায়ুর চাপকে পৃথিবীর প্রমাণ বায়ুর চাপ ধরা হয়, যার পরিমান ১০১৩.২৫ মিলিবার। এই বায়ুর চাপ কোথাও কম আবার কোথাও বেশি হয়ে থাকে। বায়ুচাপের তারতম্যের কারণ গুলি নিম্নে বর্ননা করা হল। 

বায়ুচাপের তারতম্যের কারণ গুলি উল্লেখ কারণ
১. বায়ুতে জলীয় বাষ্পের তারতম্য – জলীয় বাষ্প বিশুদ্ধ বায়ুর থেকে হালকা, এই কারণে বর্ষাকালে জলীয়বাষ্প পূর্ন আর্দ্র বায়ুর চাপ কম । অপর দিকে শীতকালে বাতাসে জলীয় বাষ্প কম থাকে বলে বায়ু ভারী হয় ও বায়ুর চাপ বেশি হয়ে থাকে।

২. বায়ুর উষ্ণতার তারতম্য – বায়ু উত্তপ্ত হলে আয়তনে বাড়ে এবং বায়ুর ঘনত্ব ও ওজোন কমে। অপরদিকে বায়ুর উষ্ণতা হ্রাস পেলে আয়তন হ্রাস পায় বলে ওজোন ও ঘনত্ব বেড়ে যায়। এসব কারণে উত্তাপিত হালকা বায়ু চাপ কম দেয় এবং শীতল ভারী বায়ু বেশি চাপ প্রদান করে। বায়ুর উষ্ণতার তারতম্য  বায়ুমণ্ডলের চাপের তারতম্যের অন্যতম কারণ । অতিরিক্ত উষ্ণতার জন্য নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে সারা বছর নিম্নচাপ এবং শীতলতার জন্য মেরু অঞ্চলে সারা বছর উচ্চচাপ বিরাজ করে।

৩. ভূ-পৃষ্টের উচ্চতা – বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে বায়ুচাপ বেশি হয় কারণ উপরের সকল বায়ুস্তরের ওজন নিচের বায়ু স্তরের উপর পরে। এই কারণে সমুদ্র সমতল থেকে যতই উঁচুতে ওঠা যায় ততই বায়ুর ঘনত্ব ও ওজন কমে। সাধারণত প্রতি কিমি উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর চাপ প্রায় ১১৫ মিলিবার কমে।

৪. পৃথিবীর আবর্তন – পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্যেও বায়ুচাপের পার্থক্য ঘটে। পৃথিবীর আবর্তনের বেগ নিরক্ষীয় অঞ্চলে বেশি হওয়ায় নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে বাতাস ছিটকে অপসারিত হয়ে যায়, তাই নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুর চাপ কম। অপর দিকে মেরু অঞ্চলে আবর্তন গতি তুলনামূলক ভাবে কম হওয়ায় বাতাস এখান থেকে সরে যায় না বলে উচ্চচাপের অবস্থান দেখা যায়।

৫. স্থল জলভাগের অবস্থান – মধ্য অক্ষাংশীয় অঞ্চলে জলভাগের তুলনায় স্থলভাগ গ্রীষ্ম কালে বেশি উষ্ণ এবং শীতকালে বেশি শীতল থাকে । এই জন্য স্থল ভাগে গ্রীষ্মকালে নিম্নচাপের ও শীতকালে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়।      
  

কোন মন্তব্য নেই:

Deejpilot থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.