উৎপত্তি অনুসারে মৃত্তিকার শ্রেণীবিভাগ - আঞ্চলিক, আন্তঃআঞ্চলিক ও অআঞ্চলিক
দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক
পরিবেশে ভৌত-রাসায়নিক ও জৈবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদি শিলার পরিবর্তনের মাধ্যমে
ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বিভিন্ন খনিজ ও জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ যে পাতলা ভঙ্গুর আবরনী
স্তর সৃষ্টি হয়, যা উদ্ভিদ বৃদ্ধির সহায়ক, তাকে মৃত্তিকা বলে। উৎপত্তি অনুসারে মৃত্তিকাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয় – আঞ্চলিক, আন্তঃআঞ্চলিক ও অআঞ্চলিক ।
১. আঞ্চলিক মৃত্তিকা / Zonal Soil
কোনো নিদিষ্ট অঞ্চলের জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে
যে মাটি গঠিত হয়, তাকে আঞ্চলিক মৃত্তিকা বলে।
যেহেতু এই মৃত্তিকা গঠন প্রক্রিয়া মূলত জলবায়ুর উপাদান গুলির দ্বারা
নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই নিরক্ষরেখা থেকে মেরু বিন্দু পর্যন্ত জলবায়ুর ভৌগোলিক
পরিবর্তনের জন্য এক জলবায়ু অঞ্চল থেকে অন্য জলবায়ু অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন মৃত্তিকার
বিকাশ ঘটেছে।
অতএব আদিশিলার প্রভাব ব্যতিরেখে মূল শিলার প্রভাবে উৎপন্ন মৃত্তিকাকে আঞ্চলিক
মৃত্তিকা বলে।
উদাহরন – চারনোজেম, সিরোজেম, ল্যাটেরাইট, পডসল, তুন্দ্রা প্রভৃতি
২. আন্তঃআঞ্চলিক মৃত্তিকা / Intra-zonal Soil
আঞ্চলিক মাটির মধ্যেই যেখানে জলবায়ু ও উদ্ভিদের ভূমিকা ছাড়া কেবল স্থানীয় কোনো
বৈশিষ্ট্যের অপর ভিত্তি করে, যে সব মাটি গঠিত হয় , তাদের আন্তঃআঞ্চলিক মৃত্তিকা বলে।এই প্রকার মাটি গঠনে
মূল শিলার বৈশিষ্ট্য, জলবায়ু ও লবণতার প্রভাব বেশি।
উৎপত্তি - বিভিন্ন ভাবে এধরনের মাটি সৃষ্টি হয়। উৎপত্তি অনুসারে এই জাতীয় মাটি
গুলি হল -
ক) জলাভূমির মৃত্তিকা - বিভিন্ন প্রকার জলাভূমিতে
অবায়ুজীবি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা জৈব পদার্থ বিয়োজিত হয়ে, যে কালচে রঙের মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়, তাকে জলাভূমি মৃত্তিকা বা গ্লেই মৃত্তিকা বলে।
যেমন - পিট বা বগ মৃত্তিকা
খ) চুনময় মৃত্তিকা - শিলাতে চুন বা চুনজাতীয় পদার্থের প্রাধান্য থাকলে
চুনাময় মৃত্তিকা গড়ে ওঠে। যেমন - চুনাপাথর বা চক শিলা থেকে উৎপন্ন রেনজিনা মৃত্তিকা । এই মৃত্তিকা সাদা, ধূসর ও বাদামি বর্নের হয়।
গ) লবনাক্ত মৃত্তিকা - মাটির উপরিভাগে লবনের সঞ্চয় ঘটলে লবনাক্ত মৃত্তিকা
গড়ে ওঠে। শুষ্ক ও শুষ্ক প্রায় অঞ্চলে ধৌত প্রক্রিয়া কম হয়, ফলে লবনের সঞ্চয় ঘটে। আবার বাষ্পীভবন বেশি হওয়ায়
কৈশিক প্রক্রিয়ায় দ্রবীভূত লবন উপরে উঠে আসে। এই ভাবে লবনাক্ত মৃত্তিকার সৃষ্টি
হয়। এই মাটি হল ক্ষারধর্মী।
উদাহরণ - সোলানচাক ও সোলোনেৎজ
মৃত্তিকা ।
৩. অআঞ্চলিক মৃত্তিকা / Azonal Soil
বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয় প্রাপ্ত শিলা চূর্ন বৃষ্টি, জলপ্রবাহ, হিমবাহ, ও বায়ুপ্রবাহের দ্বারা বাহিত
হয়ে অন্য কোনো নিচু অঞ্চলে গঠিত জমা হয়ে, যে মৃত্তিকা গঠিত হয়, সেই মাটি কে অআঞ্চলিক মৃত্তিকা
বলে।
উদাহরণ – পলিমাটি, লোয়েস মাটি প্রভৃতি
ক) জলাভূমির মৃত্তিকা - বিভিন্ন প্রকার জলাভূমিতে অবায়ুজীবি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা জৈব পদার্থ বিয়োজিত হয়ে, যে কালচে রঙের মৃত্তিকা সৃষ্টি হয়, তাকে জলাভূমি মৃত্তিকা বা গ্লেই মৃত্তিকা বলে।
খ) চুনময় মৃত্তিকা - শিলাতে চুন বা চুনজাতীয় পদার্থের প্রাধান্য থাকলে চুনাময় মৃত্তিকা গড়ে ওঠে। যেমন - চুনাপাথর বা চক শিলা থেকে উৎপন্ন রেনজিনা মৃত্তিকা । এই মৃত্তিকা সাদা, ধূসর ও বাদামি বর্নের হয়।
গ) লবনাক্ত মৃত্তিকা - মাটির উপরিভাগে লবনের সঞ্চয় ঘটলে লবনাক্ত মৃত্তিকা গড়ে ওঠে। শুষ্ক ও শুষ্ক প্রায় অঞ্চলে ধৌত প্রক্রিয়া কম হয়, ফলে লবনের সঞ্চয় ঘটে। আবার বাষ্পীভবন বেশি হওয়ায় কৈশিক প্রক্রিয়ায় দ্রবীভূত লবন উপরে উঠে আসে। এই ভাবে লবনাক্ত মৃত্তিকার সৃষ্টি হয়। এই মাটি হল ক্ষারধর্মী।
কোন মন্তব্য নেই: