ঘূর্নবাত কাকে বলে ও বৈশিষ্ট্য
নিম্ন বায়ুমণ্ডলীয় একটি আকস্মিক ঘটনা হচ্ছে ঘূর্নবাত। ঘূর্নবাত এমন এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় যা পৃথিবীর জীব জগত ও বিপুল সম্পদের ধ্বংস করতে সক্ষম। ঘূর্নবাত বা সাইক্লোন শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ ' Kukloma' থেকে যার অর্থ "সাপের কুন্ডলী"।
কোনো স্বল্প পরিসর স্থান কোনো
কারণে হঠাৎ উষ্ণ হলে গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। বায়ুচাপের সমতা রক্ষা করার জন্য
পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বায়ু প্রবল বেগে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ধাবিত হয় এবং কালক্রমে
উর্দ্ধগামী হয়। এই বায়ু কে ঘূর্নবাত বলে।
ঘূর্নবাতের বৈশিষ্ট্য গুলি হল
ক) কেন্দ্রে নিম্নচাপের উপস্থিতি – ঘূর্নবাতের সমগ্র এলাকার বায়ুর চাপ খুবই কম থাকে। বিশেষ করে ঘূর্নবাতের কেন্দ্রে
চাপ সর্বনিম্ন হয়। ঘূর্নবাতের কেন্দ্রে এই চাপ ৮৫০ – ৯০০ মিলিবার হয়ে
থাকে।
খ) বায়ু প্রবাহের গতি – ঘূর্নবাতে বায়ু প্রবাহের গতি ঘন্টায় ২০ কিমির কম হয় না
এবং এই গতিবেগ ঘন্টায় ৪০০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে।
গ) বায়ু প্রবাহের দিক – বায়ু নিম্নচাপ কক্ষের চারদিকে আবর্তিত হতে হতে প্রবাহিত
হয়। এটি উত্তর গোলার্ধে বামদিকে ও দক্ষিন গোলার্ধে ডান দিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়।
ঘ) দুর্যোগপূর্ন আবহাওয়া – ঘূর্নবাত যতক্ষন অবস্থান করে, ততক্ষন আবহাওয়া দুর্যোগ পূর্ন থাকে।
ঙ) শীর্ষের উপস্থিতি – প্রত্যেক ঘূর্নবাতে ঘূর্নির একটি শীর্ষ থাকে। এই শীর্ষ স্তর জেট বায়ু স্রোতের
সাথে যুক্ত হলে ঘূর্নবাতের গতি ওই বায়ু স্রোতের পথকে অনুসরন করে। এছাড়া বায়ুর চাপ বলয়ের স্থানান্তরের
সঙ্গে সঙ্গে এর গতিপথের পরিবর্তন হয়।
চ) চাপের পার্থক্য – ঘূর্নবাতের বহিঃসীমানা ও কেন্দ্রের মধ্যে তাপের পার্থক্য
যেমন তীব্র তেমনি চাপের পার্থক্যও প্রবল।
ছ) কেন্দ্রমুখী বায়ু – চারদিক থেকে বায়ু ঘূর্নবাতের কেন্দ্রের দিকে ধাবিত হয়
অর্থাৎ ঘূর্নবাতে বায়ু কেন্দ্রমুখী।
জ) শক্তিলাভ – লীনতাপ ও জলীয় বাষ্প থেকে ঘূর্নবাত তার শক্তি লাভ করে।
ঝ) প্রকারভেদ – আঞ্চলিক অবস্থান ও প্রকৃতিগত পার্থক্য অনুযায়ী ঘূর্নবাত
কে দুই ভাগে ভাগ কয়া হয়। ১. ক্রান্তীয় ঘূর্নবাত ও ২. নাতিশীতোষ্ণ ঘূর্নবাত
কোন মন্তব্য নেই: