স্বাভাবিক ও মরু ক্ষয়চক্রের পার্থক্য আলোচনা কর।।
ক্ষয়চক্রের ওপর জলবায়ুর প্রভাব অত্যন্ত স্পষ্ট। বিভিন্ন জলবায়ু অঞ্চলে বিভিন্ন
প্রকার প্রাকৃতিক শক্তি ক্রীয়াশীল হয়। বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়চক্র
ঘটে থাকে। যেখানে নদীর ক্ষয়কার্যের
প্রাধান্য থাকে, তাকে স্বাভাবিক ক্ষয়চক্র বলে আবার মরু অঞ্চলে বায়ু দ্বারা
যে ক্ষয়চক্র সম্পূর্ন হয়, তাকে মরু ক্ষয়চক্র বলে।স্বাভাবিক ও মরু ক্ষয়চক্রের মধ্যে নিম্নলিখিত পার্থক্য গুলি লক্ষ্য করা যায় –
ক্ষয়চক্র - সমুদ্র পৃষ্টের
ওপরে উত্থিত কোন ভূমিরূপ জলধারা, বায়ু, বৃষ্টিপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়কার্যের
ফলে প্রাথমিক অবস্থা থেকে নিদিষ্ট ক্রম অনুসারে কতগুলি অন্তবর্তী পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে
শেষ অবস্থায় পৌছানোকে ক্ষয়চক্র বলে।
১. নিয়ন্ত্রক গত পার্থক্য
স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রে প্রবাহমান জলধারা বা নদী ভূমিরুপের বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ন
ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে মরু ক্ষয়চক্রে আবহবিকার, জলপ্রবাহ ও বায়ু প্রবাহ ভূমিরুপের
বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।
২. পরিলক্ষিত অঞ্চল
আদ্র নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলে স্বাভাবিক ক্ষয়চক্র কার্যকরী হয়। অপর দিকে মরু দেশীয় অঞ্চলে মরু
ক্ষয়চক্রের প্রাধান্য দেখা যায়।
৩. ভূমির বন্ধুরতা
স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রে ভূমিভাগের বন্ধুরতা পরিনত অবস্থা পর্যন্ত ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে
থাকে। কিন্তু মরু ক্ষয়চক্রে ভূমিভাগের বন্ধুরতা ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে।
৪. ক্ষয়চক্রের শেষসীমা
সমুদ্র পৃষ্টকে সাধারণত স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রের শেষ সীমা হিসাবে ধরা হয়। অপর দিকে ভৌমজল পৃষ্ট বা হ্রদকে
মরুক্ষয় চক্রের শেষ সীমা ধরা হয়।
৫. হ্রদের প্রকৃতি
নদী ক্ষয়চক্রের
বার্ধক্য অবস্থায় অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের সৃষ্টি হয়। মরুক্ষয় চক্রের যৌবন অবস্থায়
প্লায়া হ্রদের সৃষ্টি হয়।
৬. সৃষ্ট ভূমিরূপ
স্বাভাবিক ক্ষয়চক্রের বার্ধক্য অবস্থায় সমপ্রায়ভূমি বা পেনিপ্লেন ও অবশিষ্ট ভূমিরূপ
হিসাবে মোনাডনক গঠিত হয়। অন্যদিকে মরু ক্ষয়চক্রের বার্ধক্য পর্যায়ে পেডিপ্লেন ও অবশিষ্ট ভূমিরূপ হিসাবে
ইনসেলবার্জ গঠিত হয়।
কোন মন্তব্য নেই: