পৃথিবীর অধিকাংশ মরুভূমি মহাদেশের পশ্চিম অংশে অবস্থিত কেন


পৃথিবীর অধিকাংশ উষ্ণ মরুভূমি গুলি উপক্রান্তীয় অঞ্চলের মহাদেশের পশ্চিমাংশে অবস্থিত। যেমন – আফ্রিকার কালাহারি, দক্ষিন আমেরিকার আটাকামা ও প্যাটাগনিয়া, উত্তর আমেরিকার সোনেরান, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ান মরুভূমি প্রভৃতি মরুভূমি গুলি মহাদেশের পশ্চিম অংশে অবস্থিত

আবহাওয়াবিদ ট্রেওয়ার্থার মতে, উপক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের পশ্চিমাংশে মরুভূমি সৃষ্টির কারণ গুলি হল –

১) স্থিতিশীল বায়ুপুঞ্জ – মহাদেশের পশ্চিম প্রান্তে উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ অঞ্চলে বায়ুপুঞ্জ স্থিতিশীল প্রকৃতির। তাই এখানে মেঘ সৃষ্টি হয় না এবং বৃষ্টিপাতও হয় না । এই অঞ্চলে মরুভূমি সৃষ্টি তে স্থিতিশীল বায়ুপুঞ্জই দায়ী।

২) জলীয় বাষ্পের অভাব – উত্তর –পূর্ব ও দক্ষিন-পূর্ব আয়ন বায়ু মহাদেশ গুলির পূর্ব অংশে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায় । এর পর এই বায়ু যতই মহাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বাতাসে জলীয় বাস্পের পরিমান ততই কমতে থাকে। মহাদেশের পশ্চিম প্রান্তে পৌছানোর পর এই বায়ুতে বেশি বৃষ্টিপাত ঘটানোর মতো জলীয় বাষ্প আর থাকে না। ফলে, মহাদেশের পশ্চিমাংশের উপক্রান্তীয় অঞ্চলে উষ্ণ মরুভূমির সৃষ্টি হয়।

৩) উষ্ণ আয়ন বায়ু – মহাদেশের পশ্চিম প্রান্তে উপক্রান্তীয় অঞ্চলে উষ্ণ আয়ন বায়ু কোনো বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ সৃষ্টি করতে পারে না বলে এই অঞ্চলে খুব স্বল্প পরিমান বৃষ্টিপাত হয়।

৪) শীতল সমুদ্র স্রোতের উপস্থিতি – মহাদেশের উপকূল অঞ্চলে শীতল সমুদ্র স্রোত প্রবাহিত হলে ওই অঞ্চলে কুয়াশার সৃষ্টি হয় এবং বাতাস শুষ্ক হয়ে পরে। ফলে বৃষ্টি না হওয়ায় মরুভূমি সৃষ্টির অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি হয়।

৫) অতি উষ্ণ বাতাস – বৃহৎ অস্ট্রেলীয় মরুভুমি ও সাহারা মরুভূমিতে বাতাস উষ্ণ হয়ে ওপরে উঠে যায়। অত্যাধিক উষ্ণতার জন্য নিয়মিত বৃষ্টিপাত হয় না। তবে কখনো কখনো কিউমুলোনিম্বাস মেঘ থেকে যে দুই এক ফোটা বৃষ্টি নামে তা ভূ-পৃষ্ঠে পৌছানোর আগেই শুকিয়ে যায়।

এই সব কারণে বেশির ভাগ মরুভূমি গুলি মহাদেশের পশ্চিম অংশে গড়ে ওঠে।

কোন মন্তব্য নেই:

Deejpilot থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.