যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকারের পার্থক্য


সাধারণত আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান দ্বারা শিলা সমূহ ভেঙে চূর্ণ বিচূর্ণ বা বিয়োজিত হয়ে সেখানেই অর্থাৎ মূল শিলার ওপর অবস্থান করলে তাকে আবহবিকার বলে। এই আবহবিকার দুটি প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়, যথা - যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকার। এই যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকারের মধ্যে বৈশিষ্ট্য গত নানা রূপ পার্থক্য দেখা যায়। এখানে যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকারের পার্থক্য গুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। 

1. সংজ্ঞাগত পার্থক্য
👉 উষ্ণতা, বৃষ্টিপাত, তুষার প্রভৃতি আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের মাধ্যমে যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠের শিলা সমূহ চূর্ণ বিচূর্ণ হলে তাকে যান্ত্রিক আবহবিকার বলে। 
👉 যখন জলীয় বাষ্প বা জলের মাধ্যমে শিলা সমূহের খনিজ পদার্থ দ্রবীভূত, বিচ্ছিন্ন ও পরিবর্তিত হয়ে যায়, তখন তাকে রাসায়নিক আবহবিকার বলে। 

2. প্রকৃতিগত পার্থক্য 
👉 যান্ত্রিক আবহ বিকারের ফলে শিলার শুধু মাত্র আকৃতি গত বা ভৌত পরিবর্তন হয়।
👉 রাসায়নিক আবহ বিকারের ফলে শিলার মৌলিক খনিজ পদার্থ গুলি রূপান্তরিত হয়ে গৌণ বা যৌগিক খনিজ পদার্থে পরিণত হয়। 

3. স্থানগত পার্থক্য 
👉 উষ্ণ মরু ও মরু প্রায় অঞ্চলে যান্ত্রিক আবহবিকার বেশি হয়।
👉 উষ্ণ আর্দ্র জলবায়ু অঞ্চলে রাসায়নিক আবহবিকার বেশি হয়ে থাকে।

4. আবহবিকারের নিয়ন্ত্রক 
👉 বায়ুর উষ্ণতার পরিবর্তন, চাপ, বায়ুর আর্দ্রতা ও জৈবিক প্রক্রিয়া যান্ত্রিক আবহবিকারের মূল নিয়ন্ত্রক হিসাবে কাজ করে। 
👉 রাসায়নিক আবহবিকারের নিয়ন্ত্রক গুলি হল জল, অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড প্রভৃতি।

5. প্রক্রিয়াগত পার্থক্য 
👉 যান্ত্রিক আবহবিকারের প্রক্রিয়া গুলি হল শল্কমোচন, প্রস্তর চাই বিচ্ছিন্ন করন, ক্ষুদ্র কনা বিশরন, বোল্ডার ভাঙ্গন প্রভৃতি।
👉 রাসায়নিক আবহবিকারের প্রক্রিয়া গুলি হল কারণ, কার্বনেশন, হাইড্রেশন, হাইড্রোলিসিস প্রভৃতি।

6. নতুন খনিজের উৎপত্তি 
👉 যান্ত্রিক আবহবিকারের মাধ্যমে নতুন কোন খনিজ উপাদানের সৃষ্টি হয় না।
👉 রাসায়নিক আবহ বিকার প্রক্রিয়ার দ্বারা শিলার মূল খনিজ পরিবর্তিত হয়ে নতুন খনিজের উৎপত্তি ঘটে। 

7. সময় 
👉 যান্ত্রিক আবহবিকার প্রক্রিয়ায় শিলার চূর্ণ করন অতি দ্রুত গতিতে সম্পন্ন হয়ে থাকে। 
👉 রাসায়নিক আবহবিকার দ্বারা শিলার বিয়োজন বা ভাঙনে অধিক সময় ব্যয় হয়। অর্থাৎ এটি ধীর গামী প্রক্রিয়া। 

কোন মন্তব্য নেই:

Deejpilot থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.