ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট বলতে কী বোঝ

বাস্তুবিদ্যায় বাস্তুতন্ত্রের সাথে সর্ম্পকীত ধারনা গুলির মধ্যে ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট বা বাস্তুতান্ত্রিক পদচিহ্ন অন্যতম।ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট হল এমন এক পদ্ধতি যার সাহায্যে পৃথিবীরূপ বাস্তুতন্ত্র থেকে মানুষের চাহিদা  পূরন এবং সেই চাহিদা পূরনের ফলে বাস্তুতন্ত্রে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়, তা পুনরুত্থানের মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্মের চাহিদা পূরণের ক্ষমতা কে পরিমাপ করে।

ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট এর অর্থ  – বাস্তুবিদ্যার একটি গুরুত্ব পূর্ন উদ্দেশ্য বাস্তুতান্ত্রিক পদাঙ্ক বা ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট পরিমাপ করা কারণ পরিবেশ গত স্থায়িত্ব মূল্যায়নের এটি একটি মূল পদ্ধতি।

মানব সমাজের বিকাশ ও বৃদ্ধির জন্য যে সব প্রকৃতি সৃষ্ট জৈবিক ভাবে উৎপাদনশীল সম্পদের প্রয়োজন, যেমন- জমি, সমুদ্র, হ্রদ, নদী, পর্বত প্রভৃতি পরিমাপ করার একটি কৌশল হল বাস্তুতান্ত্রিক পদচিহ্ন।

সুতরাং ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট হল মানব দ্বারা গ্রহিত সম্পদের পরিমান পরিমাপ ও মানব কর্তৃক উৎপন্ন বর্জ্য শোষণ করার পদ্ধতি। এটি আসলে মানুষের প্রয়োজন ও উপস্থিত সম্পদের মধ্যে তুলনা ছাড়া আর কিছুই নয়।

ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট  শব্দের প্রবক্তাঃ মাথিস ওয়াকারনাগেল এবং উইলিয়াম রীস  ১৯৯০ সালে বাস্তুতান্ত্রিক পদচিহ্ন শব্দ টি ব্যবহার করেন।

ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট সম্পর্কীত কিছু  মূখ্য ধারণা ঃ

Biological Capacity - এটি জৈবিক উপকরন উৎপাদন ও মানুষের দ্বারা উৎপন্ন বর্জ্য শোষণ করার ক্ষমতা কে বোঝায়।

Global Hecter - এটি একটি একক যা একটি নিদিষ্ট বছরে পৃথিবীর সমস্ত উৎপাদন শীল ভূমি এবং সমুদ্র অঞ্চলের গড় উৎপাদন শীলতা কে অন্তর্ভুক্ত করে।

Ecological Overshoot - যখন কোনো বাস্তুতন্ত্র থেকে মানুষের চাহিদা, সেই বাস্তুতন্ত্র দ্বারা সম্পদ গুলি পুনরায় তৈরি করার ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যায়, তখন এটি দেখা যায়।

ইকোলজিক্যাল ফুটপ্রিন্ট উদ্দেশ্য 
১. মনুষ্য চাহিদার সাথে পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের পুনরুত্থানের ক্ষমতার তুলনা।
২. মানুষ ও শিল্প বর্জ্য দ্বারা পরিবেশের ক্ষতির ব্যাখ্যা দেওয়া।
৩. স্থিতিশীল উন্নয়নের পন্থা বের করা।
৪. পরিকল্পনা কারিদের দূষণ রোধের উপায় নির্ধারনে সাহায্য করা।
৫. বাস্তুতন্ত্রের ধারন ক্ষমতার ধারাবাহিক তথ্য সংগ্রহ করা।
৬. অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য সম্পদের সঠিক বণ্টনে সাহায্য করা।

World Wide Fund (WWF) এর মতে মানব চাহিদা জৈবিক ক্ষমতা কে অতিক্রম করে গেছে অর্থাৎ বর্তমান প্রাকৃতিক সম্পদ বদ্ধিত জনসংখ্যার প্রযোজন ও চাহিদা মেটাতে অক্ষম। ওয়াকারনাগেল এবং উইলিয়াম রীস পরিমাপ করেন, বর্তমান পৃথিবীর ৬০০ কোটি মানুষের জন্য পৃথিবীর জৈবিক ক্ষমতা প্রতি ব্যক্তিপিছু প্রায় ১.৩ হেক্টার, যা ২০০৬ সালে প্রকাশিত ১.৮ গ্লোবাল হেক্টার থেকে কম।

1 টি মন্তব্য:

Deejpilot থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.